1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

গাংনীতে চড়া দামেও মিলছে না সার, বিপাকে চাষি

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭৯ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : মেহেরপুরের গাংনীতে ডিলার ও সাব ডিলার পর্যায়ে সার সংকটের কথা বলা হলেও বেশি টাকা দিলেই পাওয়া যাচ্ছে সার। চাষিরা কাঙ্খিত পরিমাণে পাচ্ছেন না টিএসপি ও ডিএপি সার। সার সংকটের ক্ষেত্রে বিএডিসি ডিলারদেরকে দায়ী করেছেন কৃষকরা। সার উত্তোলন ও বিক্রির ক্ষেত্রে লাইসেন্সের শর্ত লঙ্ঘন করে কালো বাজারে বিক্রির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। সার সংকটের বিষয়ে কৃষি অফিসারের উপর দায় চাপিয়েছেন বিএডিসি। তবে সার সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিস। এদিকে অবৈধ মজুদ ও বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগে মেহেরপুর ও মুজিবনগরে অভিযান চললেও সাড়া নেই গাংনী উপজেলায়।

অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে বিচিত্র সব তথ্য। গাংনী উপজেলার নওপাড়া বাজারে সাজেদুর রহমানের মালিকানায় বিশ্বাস ট্রেডার্স নামে বিএডিসির লাইসেন্সধারী একটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা থাকলেও সেখানে নেই গুদাম এবং সার বিক্রির দোকান। গেল নভেম্বর মাসে এই প্রতিষ্ঠান বিএডিসি থেকে ১৬.২৫ মেট্রিক টন টিএসপি এবং ১৭.২৫ মেট্রিক টন এমওপি সার উত্তোলন করেছেন। অথচ নওপাড়া গ্রামের কোন চাষি তার কাছ থেকে সার পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। একই অভিযোগ রয়েছে গাড়াডোবের ওয়াহেদ ট্রেডার্সের। তার লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছেন মেহেরপুরের জনৈক তোতা।

নওপাড়ার চাষি জামিরুলসহ কযেকজন জানান, বিশ্বাস ট্রেডার্স বিগত ১০ বছরেও এখানে কোনো সার বিক্রি করেনি। স্থানীয় বাজারে দোকান দেখিয়ে লাইসেন্স নেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। এ ডিলার তার লাইসেন্স অন্যকে দিয়ে অন্য জায়গাতে ব্যবসা করান। বিনিময়ে একটা লাভ্যংশ পান তার কাছ থেকে। কৃষি অফিস কোনো পর্যবেক্ষণ করেন না। এদিকে চাষিদের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বিএডিসি ডিলার সাজেদুর রহমানের পিতা সৈয়দ আলীর কথায়। তিনি বিষয়টি স্বীকার করে জানান, লাইসেন্সটি অন্যের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে কিছু কমিশন পান। শুধু বিশ্বাস কিংবা ওয়াহেদ ট্রেসার্ড নয়, এর মত জেলার বিএডিসি লাইসেন্সধারী অনেক প্রতিষ্ঠান কাগজে কলমে সার উত্তোলন ও বিক্রির হিসেব দেখালেও বাস্তবে তাদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি। নিজে বিনিয়োগ না করে সার বরাদ্দের কাগজ অন্য জায়গায় বিক্রির মাধ্যমে বিনা পুঁজিতে কিছু টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এসব ডিলাররা। ফলে সার সংকট আর সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে সার বিক্রির কারসাজি শুরু হচ্ছে এখান থেকেই।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বিএডিসি ডিলারের সংখ্যা মোট ১০০ জন। নভেম্বর মাসে এ সকল ডিলাররা বিএডিসি থেকে টিএসপি ১ হাজার ৫৬৭ মেট্রিক টন এবং ১ হাজার ৫১৭ মেট্রিক টন এমওপি সার উত্তোলন করেছেন। একইসাথে আমদানীকারকদের কাছ থেকে বিসিআইসির ৩৫ জন ডিলার ডিএপি সার তুলেছেন ১ হাজার ৭৩৫ মেট্রিক টন। চলতি ডিসেম্বর মাসে জেলার ১ হাজার ১৮১ মেট্রিক টন টিএসপি, ১ হাজার ৪৪২ মেট্রিক টন ডিএপি এবং ১ হাজার ৫২৭ মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দের এই সারগুলো ডিলারদের মাধ্যমে জেলায় আসতে শুরু করেছে তবুও সার সংকট কমছে না।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ডিলাররা সার উত্তোলন করলেও চাষিরা পাচ্ছেন না কাঙ্খিত পরিমাণ সার। মাঠ পর্যায়ে আলু, গম, শীতকালীন সবজি ও ভুট্টাসহ রবি ফসল আবাদের ভরা মৌসূমে সার সংকটে ভুগছেন কৃষকরা। এতে দেশের খাদ্যে জোগানের প্রধান মৌসূম রবিতে এবার ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। অনেক ডিলার কালো বাজারে সার বিক্রি করায় চাষিদের নাম ও বিক্রির রশিদ দেখাতে পারেন নি। আবার সার বিক্রি ও উত্তোলনের কোন স্টক রেজিস্টারও নেই। সময়মত সারের জোগান দিতে না পারলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থের পাশাপাশি দেশের সার্বিক খাদ্য উৎপাদনে বিরুপ প্রভাব পড়বে। এমনি মতামত ব্যক্ত করেছেন ধানখোলা ইউনিয়নের ভাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ফিরোজ।

পূর্ব মালসাদহ গ্রামের হালিম ও সাহারবাটি গ্রামের হাসিবুল জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের মানুষের খাদ্য জোগান দিয়ে থাকেন কৃষকরা। সময়মত সারের জোগান দিতে না পারলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থের পাশাপাশি দেশের সার্বিক খাদ্য উৎপাদনে বিরুপ প্রভাব পড়বে। তাই দ্রæত এ সমস্যা সমাধান করে নিরবিচ্ছিন্ন সার প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ঠ সরকারি দপ্তরগুলো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।

বিএডিসির সার ডিলারদের কারসারি বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসি কুষ্টিয়ার সহকারি পরিচালক মহিউদ্দীন মিয়া দায় চাপালেন কৃষি অফিসের উপর। তিনি জানান, একজন ডিলার সার তুলে বিক্রির পর কৃষি অফিস থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে আসেন। ডিলারের দোকান, গুদাম আছে কি না এবং এবং সার সঠিকভাবে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন কি না তার প্রত্যয়ন দেয় কৃষি অফিস। এ প্রত্যয়ন সাপেক্ষে তাদের পরবর্তী মাসের সার বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এদিকে বেশি দামে সার বিক্রি ও অবৈধ গুদামজাত করায় মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার চাঁদপুরে ওবাইদুল্লাহ নামের এক সার ব্যবসায়িকে একলাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী হাকিম গাজী মুয়ীদুর রহমান। একই দিনে মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুরে মোবাইল কের্টে পরিচালনা করা হয়। চড়া দামে সার বিক্রির অভিযোগে মেসার্স ফয়সাল ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে গাংনী উপজেলাতে কৃষি বিভাগের নিষ্ক্রিয়তার কারনে আজো কোন মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেনি।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার এমরান হোসেন জানান, গাংনী উপজেলায় কোন সার সংকট নেই। তবে চাষিরা কেন সার পাচ্ছে না বা কেন চড়া দামে সার কিনছেন ? এ প্রশ্নের কোন জবাব দেননি তিনি।

এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..